মহুয়া রায়চৌধুরীর কথা বললেন অভিনেত্রী দেবিকা মুখোপাধ্যায়

বলেছেন দেবিকা মুখোপাধ্যায়

 'আবির' ছবির অফার নিয়ে কিন্তু পরিচালক কাজল মজুমদার মহুয়া মারা যাবার  আমার কাছে এসেছিলেন। মহুয়ার সঙ্গে আমি এই ছবিতে কোনও শুটিং করিনি। কারণ ছবিটা যখন শুরু হয় আমি কোনও গল্পেই ছিলাম না। মহুয়া ছবিটা শেষ করে যেতে পারেনি। তখন ছবিটা শেষ করতে পরিচালক গল্পে আর একটি নায়িকা চরিত্র আমাকে নিয়ে এলেন। 'আবির' ছবিতে দেখা যায় আমার আর মহুয়ার একসঙ্গে দৃশ্য, বেশ কয়েকটা। কিন্তু ওগুলো সব সুচতুর এডিটিং। মহুয়া মারা যাবার পর তো ডিরেক্টর আমায় এই ছবির অফার দেন। আমি এই ছবিতে মহুয়ার সঙ্গে শুটিং করিনি। সেটা দর্শকরা ধরতে পারবেন না। 'আবির' ছবিটা ভালই চলেছিল। অল্প টাকার ছবি, আমরাও তো বেশি টাকা পাইনি সেসময়। কিন্তু চলেছিল। এই ছবিতে মাদ্রাজের একটা বিখ্যাত ট্রেনড কুকুর 'মোতি' ছিল। সে হিন্দি সিনেমাও অনেক করেছিল। যাকে দেখেতেও 'আবির' ছবিটা জনপ্রিয় হয়েছিল।

Mahua Roy Choudhury : আত্মহত্যা নাকি খুন, মহুয়া রায় চৌধুরীর মৃত্যুর রাতে  ঠিক কী হয়েছিল?

মহুয়ার সঙ্গে আর কোনও ছবিতে আপনি কাজ করেছিলেন?

হ্যাঁ তপন সিনহার 'রাজা'। একই ছবিতে আমরা দু'জন ছিলাম। তপন সিনহার সঙ্গে কাজ করা আমার কাছে একটা স্মরণীয় অভিজ্ঞতা। তার আগে 'বাঞ্ছারামের বাগান', 'আদালত ও একটি মেয়ে' করেছি। তবে তপনদার আর একটা ছবিতে আমি হিরোইন ছিলাম। যে রোলটা হিন্দিতে মহুয়া করেছিল। 'আদমি অউর অউরাত' ছবিতে অমল পালেকর আর মহুয়া রায়চৌধুরী ছিল। এই হিন্দি ছবিটার গল্প নিয়ে একটা বাংলা ছবিও হয়েছিল 'মানুষ'। মহুয়ার রোলটা আমি করি আর আমার বিপরীতে ছিলেন শমিত ভঞ্জ। মহুয়া মারা যাবার পর এই বাংলা 'মানুষ' ছবির আমার কাছে আসে। এই ছবিটা মুক্তিও পেয়েছিল পরে। কিন্তু এখন আর কোনও চর্চায় নেই। আমাকে শুধুই 'ছোট বৌ' বলা হয় চিরকাল। অথচ তপন সিনহার এতগুলো ছবি করেছি। 'মানুষ' ছবিতে হিরোইন আমি, তবু কজন আর জানল? ছবিটাই তো পাওয়া যায় না।

Accident or murder? Actress Mahua Roychowdhury's death a mystery

মহুয়ার সঙ্গে আপনার কাজের অভিজ্ঞতা?

মহুয়া আমার থেকে একটু সিনিয়র ছিল। তবে আমার দু'জন দু'জনকে তুই করেই বলতাম। ওঁর চলে যাওয়া বড় মাপের নায়িকার প্রস্থান। ভীষণ ইমোশনাল অ্যাকট্রেস ছিল মহুয়া। গ্লিসারিন ছাড়া কাঁদতে পারত। যেটা এখন কেউ জানেই না, পারেই না। সব চোখে ড্রপ দিয়ে দিয়ে কাঁদে। নিজের বাস্তব জীবনের কষ্টটা মহুয়ার মনে পড়ত। তাই বলত 'কান্নার সিনে আমার গ্লিসারিন লাগে না'। একটা মেয়ে যখন ক্যামেরার সামনে হাউহাউ করে কাঁদতে পারে তখন তো তাঁর ভেতরের যন্ত্রনাগুলো বেরিয়ে আসে। আমিও পারতাম সেটা।আমি মহুয়াকে বলতাম 'আমার ছোটবেলায় বাবা মারা গেছে, বাবার কথা ভেবে আমি কেঁদে ফেলি'। মহুয়াও তখন বলত 'আমার জীবনেও অনেক কষ্ট আছে। সেগুলোর কথা ভেবে আমি কেঁদে ফেলি'।

কোন মন্তব্য নেই:

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ মুক্তির বছরখানেক পর মহুয়া রায়চৌধুরীর দীর্ঘ সাক্ষাৎকার

 বাংলা ছবির সেই সময়কার অন্যতম জনপ্রিয় নায়িকা ছিলেন তিনি। তাঁর নামে প্রেক্ষাগৃহ হাউজ়ফুল হতো। প্রথম ছবি ‘শ্রীমান পৃথ্বীরাজ’ মুক্তির বছরখানেক ...