মহুয়া রায়চৌধুরী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান
মহুয়া রায়চৌধুরী লেবেলটি সহ পোস্টগুলি দেখানো হচ্ছে৷ সকল পোস্ট দেখান

বিবাহ পরবর্তী অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরী সংক্রান্ত বক্তব্য প্রত্যক্ষদর্শী এবং পরিচিত ব্যক্তিদের

 

বিয়ের দিন উত্তম কুমারের সঙ্গে মহুয়া ও তিলক

জনৈকা চন্দনা
দেবী মহুয়া সম্পর্কে বিবৃতি : অসাধারণ অভিনেত্রী! কিছুদিন আমার প্রতিবেশী ছিলেন, খুব কাছ থেকে দেখেছি। মানুষ হিসেবেও বড় মাপের ছিলেন। আমার পাশের বাড়ীর একতলার ফ্ল্যাট ভাড়া নিয়ে এসেছিলেন, ওপরের ফ্ল্যাটে পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী থাকতেন।মহুয়া আমি সমবয়সী ছিলাম। যেদিন ওর ফিল্মের কোনো কাজ থাকত না, গল্প আড্ডা হত। তখন যথেষ্ট প্রতিষ্ঠিত নায়িকা, কিন্তু কোনও অহঙ্কার বোধ ছিল না। পাড়ার যে কোনও অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ করত। ওর ছেলে গোলা বিকেলে আমাদের বাড়ীতেই খেলত অন্য বাচ্চাদের সাথে। তখন ' অভিমান' ছবির কাজ চলছে। পাড়ার ক্লাবের ছেলেরা আব্দার করল সিনেমাতে যেমন মেকাপ ছিল তেমনি করে পাড়াতে সবার মধ্যে আসতে হবে। মহুয়া তাই করেছিল। খুব সহজ সরল ছিল আর তার মূল্য ওকে খুব নিদারুন ভাবে দিতে হল...... !'

আনন্দের দিনে মহুয়া ও তিলক


জনৈক সরোজ মুন্সী বলেছেন: সত্যিই কি অপূর্ব অপরূপ সৌন্দর্য ও ভরাট হাসিমাখা মুখ। চোখগুলো অত্যন্ত সুন্দর। আর এত ভালো সাবলীল অভিনয় ক্ষমতার কোন তুলনা হয় না। উনার প্রায় বেশিরভাগ সিনেমা হলে দেখেছি ও মুগ্ধ হয়ে গেছি। আর এত অতুলনীয় প্রতিভাবান শিল্পীর প্রায় মুখোমুখি হওয়ার সৌভাগ্য হয়েছিল দমদম নাগের বাজারে এক টৈলারিং এর দোকানে।‌মাষ্টার তিলকের সাথে এসেছিলেন উনার ছেলের কয়েকটি তৈরি জামা ডেলিভারী নিতে ঠিক তার কিছুক্ষণ আগে আমিও পৌঁছেছিলাম ঐ টেলারিংএর দোকানে আমার জামা প্যান্ট ডেলিভারী নেওয়ার জন্য। টেলারের অনুরোধে একটু পিছিয়ে দাঁড়ালাম মহুয়া রায়চৌধুরী ঢুকলেন‌ একমুখ পান চিবাতে চিবাতে সেই অপরূপ সৌন্দর্য মুখে ফুটে উঠেছে পাশে থেকে প্রানভরে উপভোগ করলাম। কত অল্প বয়সে এত বড় শিল্পীর অকাল মৃত্যু আজো দর্শকরা মেনে নিতে পারেনি।‌এটা কি নিছকই একটা দুর্ঘটনা না কি হত্যা এই রহস্যভেদ হলো‌‌ না। আমার মতে মহানায়িকা সুচিত্রা সেনের পর উনি একমাত্র নায়িকা যিনি দর্শকদের মনে এক বিশাল জায়গা নিয়ে বিরাজ করছেন।আজকে কোন লেখা দেখলে মনটা ভারাক্রান্ত হয়ে যায় উনার অভাব ভীষণ ভাবে উপলব্ধি করি। উনার আত্মার শান্তি কামনা করি।


জনৈকা পার্বতী দাসের এখনো মনে পড়ে: 'আমি তখন অনেক ছোট আমাদের সোনার পুর রাজপুর বিধান সভার অন্তর্ভুক্ত রাজপুর ময়ড়াপারা S.B.Das Road এ মা বিপদ তারিনী চণ্ডী বাড়িতে পূজা দিতে এসেছিলেন মহুয়া রায়চৌধুরী, সন্ধ্যা রায়, রঞ্জিত মল্লিক, রত্না ঘোষাল, আর ও অনেকেই এসেছিলেন মহুয়া রায়চৌধুর সঙ্গে । আমাদের বাড়ির রাস্তার উল্টো দিকে মাথা বিপদ তারিনী চণ্ডী বাড়ি । সাদা রঙের তিনটে গাড়ি থেকে সব একেক করে নামছিলেন । আমাদের বাড়ির সামনে সব ভিড় করে আছে অনেক আগেই থেকে ।। বলাই দাস মা বিপদ তারিনী চণ্ডী বাড়ি র মেজো ছেলে । এই বলাই দাস উত্তমকুমার , মাধবী মুখোপাধ্যায়, সন্ধ্যা রায় বিকাল রায় আরও অনেকেরই সঙ্গে সিনেমা করে ছিলেন ।বালাই দাদু চলচ্চিত্র জগতের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন । আর আমার দিদার আপন মামা ছিলেন বলাই দাস ,। সেই সূত্রে আমার মা, কাকিমা দিদা, দিদিরা দাদা রা বলাই দাদু র কাছ থেকে জানতে পেরে পাড়ার সবাই কে খবর দেয় এবং সবাই ভিড় করে জমায়েত হয় । আমি ও বাড়ির সদস‍্যদের সাথে ছিলাম । মহুয়া রায়চৌধুরী কপাল কুন্ডলা দেখে ছিলাম খুব ছোট্ট বয়সে । আর সবার ই সিনেমা দেখেছি যারা যারা এসেছিলো। । সব গাড়ি থেকে নামছে এক এক করে মহুয়া ও নেমেছে ভিড়ের মধ্যে ভালো করে দেখবো বলে গোলে গোলে সামনে দাঁড়িয়ে আছি ।সবাই কে হাত নাড়া দিয়ে স্বাগত জানাচ্ছে মহুয়া রায়চৌধুরী ।সাবাই বলেছে মহুয়া দি তোমার অভিমান, দাদার কীর্তি আর ও অনেক ছবির নাম বলছে খুব ই অসাধারণ ছবি হয়ে ছে। তখন আমি বেশ ছোট গোলে গোলে সামনে দাঁড়িয়ে আছি হঠাৎ আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে গাল টিপে আদর করে ছিলেন । এই দৃশ্য টি আজও আমার হৃদয় মাঝে গেঁথে আছে ।কিরে সরল সাদাসিধে র মতো ব‍্যাবহার সবাই বলেছিলো এতো টুকু অহংকার নেই । আজও আমার মনে আছে মহুয়া রায়চৌধুরী ধবধবে সাদা রঙের চুরিদার পা জামা পরে এসেছিলেন। কাছথেকে দেখেছি কি অপূর্ব সুন্দর নিখুঁত পানপাতার মতো স্নিগ্ধ সুন্দর রূপের অধিকারী ও সান্ত ধীরস্থির স্বভাব সুলভ আজও সেই দৃশ্য টি হৃদয়ে ছুঁয়ে ও মনে ও চোখে ভেসে আছে । সবাই মহুয়া, সন্ধ্যা, রঞ্জিত, রত্না, আর ও যারা যারা এসেছিলো তাদের সিনেমা গুলো খুব ভালো হয়েছে বলেছিল । তাই আজও অমর হয়ে আছেন মহুয়া এই ভারত বর্ষের প্রত‍্যেক জনগণের হৃদয়ে ও ইতিহাসের পাতায় । মহুয়া তুমি এই বঙ্গে আবার যুগে যুগে ফিরে এসো যে খানেই থাকো। '


বিশ্বরূপ চট্টোপাধ্যায় বেহালায় মহুয়া রায়চৌধুরীর প্রতিবেশী ছিলেন। স্মৃতিচারণ করেছেন :
        'বেহালা পর্ণশ্রীতে বহু বছর আগে আমাদের ক্লাবের কালী পুজোর উদ্বোধন করতে এসেছিল। আজও মনে পড়ে, সদ্য শুটিং স্পট থেকে যথেষ্ট ক্লান্ত হয়ে শুধু মাত্র কথা রাখার জন্য ছুটে এসেছিল। আজও তাঁর বক্তব্য আমার মনে আছে " উপস্থিত ভদ্রমহোদয় ও ভদ্রমহোদয়া এবং আমার ভাই বোনেরা - আমি ভীষন পরিশ্রান্ত তাই বেশী কিছু বলতে পারবোনা। এই জন্য আমি ক্ষমা চাইছি। "এরপর মিনিট দশেক কথা বলে ফিতে কাটার পর্ব শেষ করে ফিরে গেল।গৌরী প্রসন্ন মজুমদারের কথায় নীতা সেনের সুরে "বাবা তারকনাথ" সিনেমা শেষ হবার পর উল্লেখিত গীতিকার ও সুরকার " রক্তজবা " নামে একটি সিনেমা করার চিন্তা ভাবনা করেন মহুয়াকে নিয়ে। ওঁর কিশোরী বেলার চরিত্রটি আমার ভাইঝিকে দিয়ে করার জন্য সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। প্রসঙ্গত জানাই, আমার নিজের ছোট ভাইয়ের মেয়ে শ্রাবন্তী চ্যাটার্জি। যাই হোক,  শুটিং শুরু হোল, দুই একটা গান হোলো। মহুয়া আমার ভাইঝিকে দেখে (শ্রাবন্তী নয়) বলেছিল, " ও মা ! এ যে আমার ছেলেবেলা হুবহু। " কিন্তু দুঃখের বিষয় ছবিটি কোনো কারণে মাঝপথে বন্ধ হয়ে যায়।'

এক মহুয়া ভক্ত, মৃদুলা পোদ্দার বলেন :
'আমার বাড়ী বাকরাহাটে। দত্ত বাড়ী। ' কপালকুন্ডলা ' ছবির শুটিং হয়েছিল আমাদের ওখানে। আমার ঘরে মহুয়া রায়চৌধুরী ও রঞ্জিত মল্লিক মেকআপ নিয়েছিলেন। আমি নিজে হাতে ওনাদের চা করে খাইয়েছিলাম। ভীষণ উপভোগ করেছিলাম পুরো ব্যাপারটা। ওই ভালো মুহুর্তগুলো এখনও স্মৃতিতে সজীব হয়ে আছে।'

সৌরভ মধুমিতা দে লিখেছেন ' রাজপুরুষ ' ছবি ও মহুয়া রায়চৌধুরীকে নিয়ে :
'আমার দাদা প্রয়াত তপন রুদ্র এই ছায়াছবির প্রযোজক ছিলেন। সেই সুযোগে ইন্দ্রপুরী ষ্টুডিওতে শুটিং দেখার সৌভাগ্য হয়েছিল।
আমি তখন খুব ছোট। এইটুকু মনে আছে যে, অনুপকুমার এর সাথে একটা শট বারবার রিটেক করতে হচ্ছিল কারণ অনুপকুমারের রসিকতায় মহুয়া দেবী হেসে ফেলছিলেন। তপন রুদ্রর আমি মামাতো ভাই, তাই আমার বাবা মা কে তপনদা মামা মামী বলে সম্বোধন করতেন। সেই শুনে মহুয়া দেবীও বলেছিলেন, তাহলে আজ থেকে আপনারা আমারও মামা মামী। এমন অমায়িক শিল্পী আজকের দিনে বিরল!'

অভিজিৎ বসু  ইংল্যান্ড থেকে লিখছেন :
'সাহেব ' ছবির পরিচালক বিজয় বসু আমার জেঠু। আমি তখন স্কুলে পড়ি। এখনও মনে আছে শুটিংয়ের সময় তাপস কাকু আমাদের বাড়ীতে থাকত। একবার শুটিং দেখতে গিয়েছিলাম। মহুয়া রায়চৌধুরীকে দেখেছিলাম তখন।
          উনি মারা যাওয়ার পর জেঠুকে অনেকবার বলতে শুনেছি , ব‍্যাপারটা ঠিক হল না। ইনভেস্টিগেশন প্রয়োজন।

মহুয়া রায়চৌধুরীকে নিয়ে যা বললেন অসমীয়া অভিনেত্রী সীমা ঘোষ

 


অসমীয়া অভিনেত্রী 
সীমা ঘোষ নিজের স্মৃতির ভান্ডার উপুড় করে শুনিয়েছেন ' দাদু নাতি হাতি ' ছবিতে মহুয়া রায়চৌধুরী সাথে কাজের অভিজ্ঞতা :

আমার সৌভাগ্য হয়েছিল ওঁর সাথে কাজ করার। উনি আসামে এসেছিলেন একটা অসমীয়া ছবির বাংলা ভার্সনে শুটিং করতে। ওনার সাথে এসেছিলেন মনোজ মিত্র,মাধবী মুখোপাধ্যায়, গীতা দে নবাগত নায়ক সুমন্ত রায়। ছবির নাম 'দাদু নাতি হাতী ' আসামের নগাঁও এর কামপুর ছবির শুটিং হয়েছিল। আমার চরিত্রটি ছিল মহুয়ার পিসতুতো বোনের মানে গীতা দে আমার মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন। শুটিং শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত ওই দিনগুলো আমার মনের মণিকোঠায় আজ উজ্জ্বল হয়ে রয়েছে। সহজ এবং অনায়াসে মানুষকে কাছে টেনে নেবার ক্ষমতা ছিল মহুয়াদির।সহজেই অপরের প্রশংসা করতেন।সরু একটা বেঞ্চে শাড়ীর আঁচলটা টেনে মাথা ঢেকে কিছুক্ষন ঘুমিয়ে নিতেন শুটিং এর ফাঁকে, আর নিয়ে গীতা মা, মাধবী মুখোপাধ্যায় ওর সঙ্গে মজা করতেন।মনোজ মিত্রকে আমার গান শোনাতে হতো। অসমীয়া গান। আমি আই.পি.টি.. সাংস্কৃতিক কর্মী ছিলাম। মহুয়াদির ছেলেমানুষী স্বভাবটা খুব ভালো লাগতো। কেন যে অত তাড়াতাড়ি চলে গেলেন! মহুয়াদি আজ তুমি যেখানেই আছো ভালো থেকো


বিবাহ পূর্ব অভিনেত্রী মহুয়া রায়চৌধুরী সংক্রান্ত বক্তব্য প্রত্যক্ষদর্শী এবং পরিচিত ব্যক্তিদের

 

শ্রীমান পৃথ্বীরাজ ' ছবির শুটিং- স্ক্রিপ্টে চোখ বুলিয়ে নিচ্ছে মহুয়া অয়ন

 মহুয়া রায়চৌধুরী সম্পর্কে ভুয়ো খবর সীমাহীন ইন্টারনেট। ইন্টারনেট শুধু মহুয়ার স্বামী এবং বাবার কথা বলে। তিন ভাইবোনের মধ্যে মহুয়া ছিল সবার ছোট। মহুয়ার বড় বোন শান্তা আর বড় ভাই পিনাকী। মহুয়ার মা পিএন্ডটি ডিপার্টমেন্টে চাকরি করতেন। দমদমে তারা টেলিফোন বিভাগের কোয়ার্টারে থাকতেন যেখানে গুজব রটে যে মহুয়ার মা একটি বস্তিতে থাকতেন। এরকম অনেক বাজে গুজব আছে যা ভিত্তিহীন প্রমাণিত হয়েছে।


এই সেই দমদমের টেলিফোন কোয়ার্টার যেখানে মহুয়া রায়চৌধুরীর বড় হয়ে ওঠা। সময়ের সাথে সাথে অনেকটাই জীর্ণতাপ্রাপ্ত। টেলিফোন কোয়ার্টারে থাকতে হলে পরিবারের কাউকে টেলিফোনে চাকরি করতে হয়। সেটা ওনার মা করতেন। এই পেজে একাধিক ্যক্তি যাঁরা ওনার শিপ্রা থেকে সোনালী হয়ে মহুয়া হওয়ার সাক্ষী তাঁরা এই কোয়ার্টারের কথা উল্লেখ করেছেন।

মহুয়া রায়চৌধুরীকে তাঁর দমদমে থাকার দিনগুলোতে খুব ভালো করে চিনতেন এমন একজন শ্রী কমল বন্দ্যোপাধ্যায় বলছেন, " শিপ্রাদের ঠিক নীচের কোয়ার্টারে আমার আর এক পরিচিত ভদ্রলোক থাকতেন , পুরো নামটা এখন মনে পড়ছে না, পদবী ছিল মৈত্র ।সেই ভদ্রলোকের ছেলের ডাকনাম

দম্পতি (1976)

ছিল "খোকন" সেই খোকনের আরও তিন বোন ছিল

জনৈকা কেয়া চক্রবর্তী মহুয়ার প্রতিবেশী ছিলেন এবং তার বক্তব্য

মহুয়ার সঙ্গে একই কলোনিতে থাকতেন কেয়া চক্রবর্তী। ১৯৭২ সালে কেয়া ও তার পরিবারের সদস্যরা ওই টেলিফোন কলোনিতে আসেন আর কয়েক মাস পরেই মুক্তি পায় শ্রীমান পৃথীরাজ। কেয়া মহুয়ার কাছে পরিচিত ছিল এবং সে কেয়ার কাছে সেলিব্রেটি ছিল না। উপরের ফটোগ্রাফে 'বি' বিল্ডিংয়ের গেট এবং মহুয়া '' বিল্ডিংয়ে থাকতেন যা 'বি' বিল্ডিংয়ের ঠিক পাশে ছিল। ক্লাইভ হাউস স্টপ - পি এবং টি কোয়ার্টার।

কেয়া আরও বলেন, ইন্টারনেটে অনেক খবর রয়েছে যে মহুয়া একটি নিম্ন আয়ের পরিবারের সদস্য, যা সম্পূর্ণ ভুয়া। মহুয়ার মা টেলিফোন বিভাগে কাজ করতেন।

ছবিতে দেখানো ভবনের পাশের একটি ভবনের ১ম তলায় থাকতেন কেয়া চক্রবর্তী। নিচতলার ফ্ল্যাট খালি ছিল আর মহুয়ার বিয়ের আগের জন্মদিনের সেলিব্রেশন করা হয়েছিল সেই ফ্ল্যাটে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন অভিনেত্রী ছায়া দেবী, অভিনেতা দিলীপ রায়। মহুয়া ছায়া দেবীকে মা বলে ডাকতো'

মহুয়ার দম দম প্রতিবেশী কেয়া চক্রবর্তী আরও জানান '57 টেলিফোন এক্সচেঞ্জ এর লাগোয়া পি অ্যান্ড কোয়ার্টারস এ বসবাস করতাম।মহুয়ার দাদার নাম ছিল পিনাকি আর দিদির নাম শান্তা। আমরা ওই কমপ্লেক্স এ যাই 1972 এ। খুব ছোটো থেকে সেখানে তাই খুব সাধারণ জীবনধারা ছিল এবং সেখানে তার কোন সেলিব্রিটি ইমেজ দেখিনি।'


মহুয়ার একজন প্রত্যক্ষদর্শীর বক্তব্য (জনৈক ধ্রুবেশ্বর রায় - Dhrubeswar Roy)

সালটা ১৯৭০ হবে খুব সম্ভবত ; একটা কোচিং সেন্টারে সপ্তম শ্রেণীর ছাত্রী হিসেবে পড়তে আসে দমদমের নাগের বাজারে তাকে পড়াতে গিয়ে সামনে থেকেই দেখেছিলাম এতই সুন্দর ছিল যে মুখের দিকে তাকিয়ে থাকা যায় না ! তখন অভিনয় জগতে এসে গেছে , কিন্তু প্রচার বা ছবির পর্দায় আসে নি বলে জানতাম না ।কিন্তু সেই বৎসরেই ' উল্টোরথ ' প্রচারে আনে ওর ক্লাসে আসারও ছেদ পড়ে তিলকের সাথে ওই নাগের বাজারেই ঘর বেঁধেছিল

মতিঝিল কলেজের পাশেই কিশোর ভারতী ইস্কুল ছিল , সেই খানেই ছিল কোচিং আমি ছিলাম ওই কলেজের ফাইনাল ইয়ারের বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ইস্কুলের ্যবস্থা করা বাসায় শিক্ষকের সাথে প্রথম সারির ছাত্র ছাত্রীর দূরত্ব সামান্যই ! আমার বয়স যাই হোক,শিক্ষক তো ! সামনে নক্ষত্ররা যতই থাকুক , পূর্ণিমার চাঁদ তো চোখ ধাঁধিয়ে দেবেই। তাই আলোর পরশ বুলিয়ে নেওয়া এত দিন বাদে এই সুন্দর সৃষ্টি যেন স্রষ্ঠা লাখে একটাই হঠাৎ করে ফেলেন , আর সেটা ভাষায় প্রকাশ করতে আমি অক্ষম।

জনৈক শ্রী অশোক বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছেন : " বর্তমানে আমি দমদমের এক বরিষ্ঠ নাগরিক পুরাতন বাসিন্দা। পি এন্ড টি কোয়ার্টারের বাসিন্দা সোনালী, থুরি মহুয়া, এবং আমার বন্ধু কমল রায়। ফলে যাতায়াত এবং বন্ধুত্ব ছিল। মহুয়ার নৃত্যপটিয়সী শিল্পী জীবন তৈরী হচ্ছে তখন। মতিঝিল স্কুলে বার্ষিক গরমের ছুটি পড়ার আগের দিন ফাংশন হতো। সেই অনুষ্ঠানে আমি আমার সহপাঠী কমল অনেক অনুনয় বিনয় করে সোনালীকে পারফরম্যান্স করিয়েছিলাম। আজও স্মৃতি হয়ে আছে সেসব। পরবর্তীতে ' শ্রীমান পৃথ্বীরাজ ' রিলিজ হয়েছিল। সেসময়কার আমার বন্ধু সহপাঠী কমল রায় দমদমের এক নামী স্কুল কে কে হিন্দু ছাত্র ছিলাম। পড়াশোনা ফুটবলে আমরা দুজনেই স্কুলকে নেতৃত্ব দিই। কমল রায় ছিল পি এ্যান্ড টি কোয়ার্টারের বাসিন্দা। ফলে আমাদের সাথে মহুয়ার তাঁর ভাই পিনাকী এবং বাবার ঘনিষ্ঠতা ছিল। সিনেমার জন্য তার সোনালী নাম পরিবর্তন করে মহুয়া রাখেন 'শ্রীমান পৃথ্বীরাজ' এর পরিচালক। স্কুলে অ্যানুয়াল ফাংশনে একবার এসে নৃত্য পরিবেশন করে। শর্ত ছিল, সোনালী নয় মহুয়া নাম ঘোষণা করতে হবে। আমরা তাই করি। বহুবছর পর সরকারি কর্মসূত্রে আমি বিভিন্ন রাজ্যে বদলী হবার ফলে যোগাযোগ ছিল না। তাছাড়া বাংলা সিনেমাতে সে তখন আইকন নায়িকা। দীর্ঘ দিন পরে দমদমের আমার পাশের পাড়াতে বিবাহিত জীবন যাপন করেছেন। এর পরে তিনি আবার সাউথ কলকাতায় ফ্ল্যাটে চলে যান। এর পর, একদিন হঠাৎ তাঁর মৃত্যু সংবাদে বাকরুদ্ধ হয়ে পড়ি। 


জনৈকা শিপ্রা দাস জানিয়েছেন মানুষ মহুয়া রায়চৌধুরীর কিছু অজানা কথা :

মহুয়া কে খুব কাছ থেকে দেখেছি।ছোটবেলায় একসাথে খেলেছি।ওর দিদির বিয়ের সময় খুব আনন্দ করেছি। ওর দিদি শান্তা বৌদি আমাদের পাড়ার বৌ। ঠিক আমাদের পাশের বাড়িটা ছিল ওদের বেহালাতে আমার বান্ধবী ছিল ।খুব মজা করতো দুষ্টু মিষ্টি নায়িকা। বেঁচে থাকলে মহানায়িকার স্থান দখল করতো।

জনৈক বদরুদ্দোজা ডোমকল: 'একটা ছবি তুলে রাখতে পারিনি বলে স্মৃতিচারণ করতে খুব কষ্ট হয়। ১৯৭০ সালের পর থেকে আমি কলকাতায় আমার খালাম্মার বাসায় গিয়ে মাঝেমধ্যে। সরজিনী নাইডু গার্লস কলেজের কাছে পি. & টি. স্টাফ কোয়ার্টারে থাকতেন আমার খালাম্মাদের পরিবার। খালুজীর অফিসেই চাকরি করতেন মহুয়া রায়চৌধুরী। প্রায়ই দেখতাম-রান্নাঘরে বসে মহুয়া রায়চৌধুরী গল্প করছেন আমার খালাম্মার সাথে। আমার খালুজী না ফেরার দেশে চলে গেছেন মাস তিনেক আগে। খালাম্মা এখন আছেন বড় ছেলের কাছে দিল্লিতে। অনেক তথ্য নেওয়া যেতেমহুয়া রায়চৌধুরীর মা চাকরি করতেন।'

চিত্তরঞ্জনের জনৈক অমিত রায় মনে রেখেছেন যে মহুয়া তার বড় বোনের চিত্তরঞ্জনের কোয়ার্টারে গিয়েছিলেন ফিল্ম শ্রীমান পৃথিরাজের কাজ শেষ করে। অমিত তখন ছোট এবং ৭৮ নম্বর রোডে সাইকেল চালাচ্ছিল। মহুয়া ওই রাস্তায় হাঁটছিল। হঠাৎ মহুয়া অমিতকে জিজ্ঞেস করল 'ভাই আমাকে সাইকেল টা একবার দেবে? আমি চালাবো'। অমিত রাজি হননি। পরে অমিত জানতে পারলেন যে উনি ছিলেন মহুয়া রায়চৌধুরী এবং অমিত রায় এখনও, যখন তার ঘটনা টি মনে আসে,  স্তম্ভিত হয়ে যান।

জনৈক বর্মি বাক্স: 'মহুয়া রায়চৌধুরীর কাকুর বাড়ি ছিল আমাদের পাড়ায় , আমার মায়েরা ছোটবেলায় একসঙ্গে খেলাধুলা করেছেন , আমাদের পাড়ায় উনি প্রথম স্টেজে নাচ করেছেন , অনেক গল্প শুনেছি ওঁর সম্পর্কে , মা মাসিরা এখনও খুব আফসোস করেন ওঁর জন্যে।'


কমল বন্দোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজ থেকে মহুয়া রায়চৌধুরী সম্পর্কে

 কমল বন্দোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজ থেকে:- গতকাল ঠিক যেখানে শেষ করেছিলাম , ঠিক সেখান থেকেই শুরু করি । যে সময়ের কথা বলছি অর্থাৎ ...