মহুয়া রঞ্জিত মল্লিকের বিপরীতে অনেক ছবিতে অভিনয় করেছেন যেমন অভিমান, লাল গোলাপ,কপালকুণ্ডলা, শঠে শাঠ্যং। মহুয়াকে নিয়ে রঞ্জিত মল্লিকের অনেক স্মৃতি রয়েছে এবং অভিমান চলচ্চিত্রের শুটিং সম্পর্কিত এমন একটি স্মৃতি:
"এখনও মনে পড়ে সে দিনটার কথা। মার খেতে খেতে মাটিতে পড়ে গেছে। তবু মুখ থেকে একটা আওয়াজ বেরোয়নি সুজিত গুহ-র ছবি ‘অভিমান’-এর শ্যুটিং চলছে। ও আর আমি স্বামী-স্ত্রীর ভূমিকায়। আমি খোঁড়া। অসহায়। খানিকটা ইনফিরিয়রিটি কমপ্লেক্স থেকেই দুর্ব্যবহার করি।
একটা দৃশ্যে হাতের ক্রাচ দিয়ে মারতে মারতে ওকে মাটিতে ফেলে দিয়ে আমার ডায়লগ ছিল। শেষ হবার পর সবাই বুঝতে পারল ভয়ংকর লেগেছে ওর। আমি উত্তেজিত হয়ে বেশ জোরেই আঘাত করে ফেলেছি। শক্ত শট। তাই যাতে রিপিট না হয় সেই জন্য টুঁ শব্দটি করেনি। কী ভীষণ একাগ্রতা!
পর পর বেশ কয়েকটা ছবিতে কাজ করেছি আমি আর মহুয়া। ‘লাল গোলাপ’, ‘অভিমান’, ‘কপালকুণ্ডলা’, ‘শত্রু’, ‘শঠে শাঠ্যং’....।
দু’যুগের বেশি কেটে গেছে তবু অরণ্যবালা কপালকুণ্ডলার সরল চাউনি, তার এক্সপ্রেশন— আজও জ্বলজ্বলে আমার কাছে।
আরেকটি দৃশ্যর কথাও কোনও দিন ভোলার নয়।
অভিমান |
‘শঠে শাঠ্যং’ ছবিতে বাবা সৌমিত্র চট্টোপাধ্যায়। মুখোমুখি মহুয়া। দরিদ্র বেকার প্রেমিককে বলে দিতে বলছে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব ধনীকন্যাকে বিয়ে করবার মতো রোজগার করে তবে যেন আসে। উত্তরে মহুয়া শুধু একদৃষ্টে তাকিয়েছিল বাবার দিকে!
অস্বীকার, অভিযোগ, ব্যথা এবং প্রতিবাদের ভাষা সব মিলেমিশে সে কী দৃষ্টি। প্রতিভা না থাকলে, চারপাশকে তীক্ষ্ণ ভাবে দেখার ক্ষমতা না থাকলে অমন জিনিস অভিনয়ে আনা সম্ভব নয়।"
প্রতিবেদক গৌতম ভট্টাচার্যের সাথে একটি সাক্ষাত্কারে রঞ্জিত মল্লিক মহুয়া সম্পর্কে তার একটি দুঃখজনক স্মৃতি প্রকাশ করেছিলেন। রঞ্জিত মল্লিক বলেন যে তিনি সাধারণত শুটিং থেকে রবিবার ছুটি নিতেন। কিন্তু মহুয়া রঞ্জিত মল্লিককে রবিবার শুটিংয়ের জন্য অনুরোধ করতেন। এটি বেশ কয়েক সপ্তাহ ধরে চলতে থাকে এবং অবশেষে রঞ্জিত মল্লিক পরিচালকের কাছে তার অসন্তোষ প্রকাশ করেন। পরিচালক রঞ্জিত মল্লিকের কাছে বিষয়টি স্পষ্ট করেন। রঞ্জিত মল্লিক জানতে পেরেছিলেন যে ঘরোয়া ঝামেলার কারণে, মহুয়া প্রতি রবিবার তার বাড়ির বাইরে থাকার চেষ্টা করে।
কোন মন্তব্য নেই:
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন