মহুয়া ভালো গল্পের ছবিতে অভিনয় করতে চেয়েছিলেন

 বলা হয়েছিল যে মহুয়া অনেক দুর্বল চিত্রনাট্য এবং নির্দেশিত ছবিতে অভিনয় করেছিলেন যেগুলি তিনি প্রচুর প্রতিভার সাথে আপস করেছিলেন। মহুয়া রায়চৌধুরী প্রচুর প্রতিভাবান ছিলেন কিন্তু তার সময়ের অনেক ভালো পরিচালক তাকে তাদের ছবিতে কাস্ট করেননি। এ নিয়ে মহুয়ার একটা দুঃখ ছিল।




মহুয়া রায়চৌধুরীর মৃত্যু নিয়ে কিছু রহস্য

 ৩ জুলাই-এর পর বাংলাদেশ চলে যাওয়ার কথা। মমতাজ আলমের ‘ঊশীলা’ ছবির নায়িকার ভূমিকায় অভিনয় করবার আয়োজন সম্পূর্ণ। অপেক্ষা শুধু ভিসা পাওয়ার।




সংশয় সন্দেহ আজও
মৃত্যুকালীন জবানবন্দি নেন এনসি বন্দ্যোপাধ্যায়, ডেপুটি সুপারিন্টেন্ডেণ্ট পুলিশ, সিআইডি এবং এএন দুবে, ইন্সপেক্টর।
সাক্ষী হিসেবে সই করেন দাদা পিনাকী রায়চৌধুরী এবং সিস্টার ঊষা। উপস্থিত ছিলেন রত্না ঘোষাল।
বহু সংশয়ের নিষ্পত্তি আজও হয় নি। সেই সময়কার সংবাদমাধ্যমে ধরা আছে অগুনতি পরস্পরবিরোধী তথ্য।—
•মাঝরাত অতিক্রান্ত।
বাড়িতে দু’জন পরিচারক। তবু মহুয়া নিজে খাবার বা দুধ গরম করতে গেল কেন?
•তিলক কিন্তু ডিনারের পরেই দুর্ঘটনা ঘটে বলে জানিয়েছিল। মহুয়ার কথামতো তার অসাবধানতাবশত যদি দুর্ঘটনা ঘটে থাকে তাহলে বাড়িতে চারজন মানুষের উপস্থিতি সত্ত্বেও কী করে এমন ভয়াবহ অবস্থায় পৌঁছেছিল?
•স্টোভ বার্স্টের একটা তত্ত্ব পরিবারের তরফ থেকে বার বার খাড়া করা হয়েছে। পুলিশ অত্যন্ত কম কেরোসিন ভরা একটি স্টোভ রান্নাঘর থেকে প্রায় অক্ষত অবস্থায় উদ্ধার করে, যেটা কোনও ভাবে কোনও দুর্ঘটনা ঘটিয়েছে বলে বিশ্বাসযোগ্য হয়নি।
•পিঠে এবং শরীরের আরও কয়েক জায়গায় কালশিটের দাগ পাওয়া যায় যার কোনও সদুত্তর মেলেনি।
•মহুয়ার মুখের ডান দিকে একটা ক্ষতচিহ্নের বিচিত্র ব্যাখ্যা মেলে বাবার কাছে।— কোনও কাপড়ের টুকরো আটকে যায় দুর্ঘটনার সময়, যেটা টেনে তুলতে গেলে মহুয়া ব্লেড দিয়ে কেটে নিতে বলে আর তাতেই নাকি এই বিপত্তি।
প্রায় সত্তরভাগ অগ্নিদগ্ধ মানুষের পক্ষে এ কি সম্ভব?
•রান্নঘর এক রকম অক্ষত। অথচ শোবার ঘরে লেপ তোষক মায় বালিশ পর্যন্ত পোড়া।
নাইটি এবং বিছানায় এত কেরোসিনের গন্ধ কোথা থেকে এসেছিল?
স্টোভ বার্স্ট করলে পিঠ, তলপেট, ঊরু এমন ভয়াবহ দগ্ধ কেন?
•নীলাঞ্জনের মাত্র তিনটি আঙুলের ডগায় সামান্য চোট ছিল। তিলক অক্ষত। শুধুমাত্র খুঁড়িয়ে হাঁটছিল।
অনেকেই মনে করেছিলেন, অমন মারাত্মক আগুন থেকে বাঁচাতে গেলে এ এক রকম অসম্ভব।
•পরিবারের তরফ থেকে কোনও এফআইআর করা হয়নি। শোনা যায়, তদন্ত চলার কিছুদিনের মধ্যে কোনও এক অজ্ঞাত কারণে তা বন্ধের নির্দেশ আসে!
কিন্তু কেন?
আজও জানা নেই তা’ও।
চূড়ান্ত অভিযোগ
ব্যক্তিগত ভাবে মাধবী চক্রবর্তী জানান মহুয়ার মৃত্যুর অনতিকাল পরে তার বাবা স্মরণসভা আয়োজন করবার প্রস্তাব নিয়ে তাঁর কাছে আসেন।
মৃত্যুর যথোচিত কারণ না জানা পর্যন্ত এ ধরনের কোনও সভায় তিনি অংশগ্রহণ করবেন না বলে প্রস্তাব ফিরিয়ে দেন মাধবী চক্রবর্তী
দশ বছর পর প্রদেশ মহিলা কংগ্রেস আয়োজিত আন্তর্জাতিক নারীদিবস উপলক্ষে মাধবী চক্রবর্তী তাঁর ভাষণে মহুয়া রায়চৌধুরীকে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ তোলেন।

আরেকটি নিষ্ঠুর 22 জুলাই - 2023

আরেকটি নিষ্ঠুর 22 জুলাই। মহুয়া তার হৃদয়ের গভীরে অনেক কষ্ট নিয়ে পৃথিবী ছেড়ে চলে গেল। অনেক কষ্ট যা মহিলার জন্য খুব বেশি ছিল এবং তাও সেই বয়সে যখন সাধারণত মহিলারা বিয়ে করে।




মহুয়া রায়চৌধুরী মারা যাওয়ার 38 বছর পেরিয়ে গেছে আজও বাঙালির স্মৃতিতে বেঁচে আছেন এই অভিনেত্রী। অভিনেত্রী প্রচুর প্রতিভা নিয়ে এসেছিলেন এবং কয়েক বছর ধরে বাংলা চলচ্চিত্র শিল্পকে শাসন করেছেন। 


অভিনেত্রীর পাশের বাড়ির মেয়ে ইমেজ এবং তার অভিনয় প্রতিভা ছিল তার টিআরপি। সেই সময়ের মহুয়ার ভক্তরা এখন প্রবীণ। কিন্তু ঘটনা হল বর্তমান সময়ের তরুণরাও মহুয়ার ভক্ত। এর পিছনে জাদু কি?


সুচিত্রা সেন তার সময়ে ড্রিমগার্ল ছিলেন কিন্তু আজ এই অভিনেত্রীকে নিয়ে তেমন ক্রেজ দেখা যায় না। সুচিত্রা সেন দীর্ঘদিন ইন্ডাস্ট্রিতে ছিলেন কিন্তু 38 বছর আগে মহুয়া মারা যান এবং ইন্ডাস্ট্রিতে তার আয়ু খুব কম ছিল।


মহুয়া ম্যাজিক মূলত তার বোন ইমেজ এর জন্য। মহুয়া অবশ্যই অনেক পুরুষ ভক্তের ড্রিমগার্ল ছিল এবং তার অনেক মহিলা ভক্ত তার সৌন্দর্য পছন্দ করেছিল কিন্তু তার বেশিরভাগ ভক্ত তাকে তাদের বোন হিসাবে বিবেচনা করেছিল। তাই, তারা আজও তাদের বোনকে স্মরণ করে এবং মনে রাখবে।


বিভিন্ন সূত্র থেকে জানা যায় মহুয়া খুব নরম মনের এবং সে একজন ভালো মা ছিল। এমনও শোনা যায় যে তিনি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রির অনেক লোককে আর্থিকভাবে সাহায্য করেছেন। তিনি পশু প্রেমিক ছিলেন। এমন মহিলা খারাপ স্ত্রী হতে পারে না। সম্ভবত তিনি তার পরিবারের সদস্যদের জন্য অর্থ উপার্জনের মেশিন ছিলেন।


আশা করি মহুয়া ইতিমধ্যে একটি নতুন জীবন পেয়েছে এবং এটি তার আগের জীবনের সমস্ত কষ্টের ক্ষতিপূরণ করবে




মহুয়া রায়চৌধুরীর অসুখী বিবাহিত জীবন নিয়ে বিপ্লব চ্যাটার্জি

 বিপ্লব চট্টোপাধ্যায় তাঁর স্পষ্ট বক্তব্যের জন‍্য প্রবাদপ্রতিম। আপনি ওনার কথা পছন্দ করতে পারেন, না পারেন – কিন্তু অগ্রাহ্য করতে পারবেন না। আজও মনে পড়ছে ,  বছর দুয়েক আগে গৌতম ভট্টাচার্যের সঞ্চালনায় ' তারাদের শেষ তর্পণ ' অনুষ্ঠানে ওনার বাষ্পরুদ্ধ কন্ঠে মহুয়া রায়চৌধুরীর স্মৃতিচারণ। শুনতে শুনতে অজান্তেই চোখের কোল বেয়ে জলের ধারা নেমেছিল।

               আপনাদের মধ‍্যে বিশাল সংখ‍্যক মানুষ বিপ্লব চট্টোপাধ‍্যায়কে জানতে ও তাঁর কাছ থেকে মহুয়া রায়চৌধুরীর কথা শুনতে নিশ্চিতভাবেই ভীষণ আগ্রহী। তাঁরা সংগ্রহে রাখতে পারেন এই বইটি। বইটি সংগ্রহ করার জন‍্য ফোন নম্বরও দেওয়া আছে।



সৌন্দর্য ও রূপচর্চা নিয়ে মহুয়া রায়চৌধুরীর অনবদ্য বিশ্লেষণ

 সেই সময়ের পত্রিকায় সৌন্দর্য ও রূপচর্চা নিয়ে মহুয়া রায়চৌধুরীর অনবদ্য বিশ্লেষণ। এখনকার নায়িকারা একটু এইসব জানলে বাংলা ছবি বাঁচান বলে থেকে থেকে স্লোগান তুলতে হত না। দর্শক স্বতঃপ্রণোদিত ভাবেই বাঁচিয়ে রাখত।





মহুয়ার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে তিলক যা বললেন

 মহুয়া রায়চৌধুরীর মৃত্যুর পর, তার স্বামী তিলক চক্রবর্তী ধীরে ধীরে চলচ্চিত্র শিল্প থেকে নিজেকে বিচ্ছিন্ন করে ফেলেন। শোনা যায়, ব্যাঙ্কের চাকরি, গান আর ছেলে তমালকে ঘিরেই তাঁর জীবন আবর্তিত হয়।

এমনও শোনা যায়, মৃত্যুর আগে মহুয়া ইন্ডাস্ট্রিতে তার সেরা বন্ধু রত্না ঘোষালকে তার ছেলের দায়িত্ব নিতে অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু ঘটনা হল তমাল তার বাবার সাথে ছিল এবং তিলক আর বিয়ে করেনি।

মহুয়ার ৫ম মৃত্যুবার্ষিকীতে তিলক যা বলেন একটি খবরের কাগজে।





কমল বন্দোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজ থেকে মহুয়া রায়চৌধুরী সম্পর্কে

 কমল বন্দোপাধ্যায়ের ফেসবুক পেজ থেকে:- গতকাল ঠিক যেখানে শেষ করেছিলাম , ঠিক সেখান থেকেই শুরু করি । যে সময়ের কথা বলছি অর্থাৎ ...